ইলিয়াছ আহমদ বাবুল
জালেমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ,মজলুমের পক্ষে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ মূখর হয়ে উঠা সকল ধর্ম ও শ্রেষ্ঠ মতাদর্শ গুলোর প্রাণ কথা। আর ইসলাম তো এ ব্যাপারে শত ভাগ আপোষহীন। তাই ইসলামের সত্য,সুন্দর এবং মানবতা ও শান্তির ধারক বাহক উলামায়ে-কেরাম সব সময় জালেমের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে আপোষহীন থেকে মানব সমাজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন। সম্্রাজ্যবাদী বৃটিশ বেনিয়াদের জুলুমে যখন আক্রান্ত উপমহাদেশ,তখন উলামায়ে কেরামের কণ্ঠ চিরেই সর্ব প্রথম ইংরেজ খেদাও আন্দোলনের সংগ্রামী ডাক এসেছিল। ভারত উপমহাদেশ এখন ‘দারুল হারব’ শত্রু কবলিত,এ এক ফতোয়া টলিয়ে দিয়েছিল ইংরেজদের মসনদ। এ সবই ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সম্্রাজ্যবাদের দোসর ইসলাম বিদ্ধেষী কুচক্রি মহল যা ছাই চাপা দিয়েও চেপে রাখতে পারেনি।
পাকিস্তানিদের দ্বারা পূর্ব পাকিস্তান তথা আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের নিরীহ মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল নির্মম ভাবে। তখন পাক জালিমদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন এই দেশের লড়াকু আমজনতার সঙ্গে তৎকালীন আলেম সমাজও। প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিলেন দুর্বার গতিতে। এটা ইতিহাসের অবিসংবাদিত সত্য ও অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। স্বাধীনতার পর ৪৪ বছর পর্যন্ত এই সত্যকে পদদলিত করা হয়েছে। ইতিহাসের পবিত্র দেহকে করা হয়েছে ক্ষতবিক্ষত। আলেম সমাজ সহ সাধারণ জনগণ যারা ধর্মের কারণে দাড়ি,টুপি ব্যবহার করে তাদের গায়েও ঢালাও ভাবে সেঁটে দেয়া হয়েছে রাজাকার,আল-বদর ও আল-সামসের অভিশপ্ত ফলক। তারা প্রজন্ম ৭১-এর পরে জন্ম হলেও!
জনপ্রিয় লেখক সাংবাদিক শাকের হুসাইন শিবলী ইতিহাসের অনির্বায্য সত্যকে স্ব-মহিমায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। উন্মোচিত করেছেন চেপে রাখা এক অধ্যায়ের। এ জন্য তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি শহর,গ্রাম ঘুরে বেড়িয়ে কষ্টিপাথরে যাচাই করে রচনা করেছেন একটি প্রামান্য গ্রন্থ ‘আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে’ উক্ত গ্রন্থ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের অংশ গ্রহণ কারী কয়েক জন আলেম মুক্তিযোদ্ধার নাম প্রকাশ করা হল। যাতে আলেম সমাজ সম্পর্কে সৃষ্ট ভূল ধারনার অবসান ঘটে।
১/ মুক্তিযুদ্ধের অগ্রসেনানী মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী (টাঙ্গাইল) ২/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মোহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর (নোয়াখালী) ৩/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা শাহ আহমদুল্লাহ আশ্রাফ (ঢাকা) ৪/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশ ৫/ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ বু্িদ্ধজীবি মাওলানা অলিউর রহমান ৬/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা উবায়দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী (সিলেট) ৭/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী (সিলেট) ৮/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুর রহমান (কুমিল্লা) ৯/ হাতিয়া দ্বীপের সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুস্তাফির রহমান (হাতিয়া দ্বীপ) ১০/ মুক্তিযুদ্ধে অকুতোভয় সৈনিক মুহাদ্দিস আব্দুস সোবহান ১১/ মুক্তিযোদ্ধা মুফতি আব্দুস সালাম (চট্টগ্রাম) ১২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আবু ইসহাক ১৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আবুল কালাম ১৪/ মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী আব্দুল মালেক (পটিয়া) ১৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা দলিলুর রহমান (চন্দ্র কোনা) ১৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মতিউর--রাসুল (রানীর হাট) ১৭/ সাহসী বীর গেরিলা কমান্ডার মাওলানা মৌলভী সৈয়দ (চট্রলা) ১৮/ মুক্তিযোদ্ধা আল্লামা দানেশ (পটিয়া) ১৯/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা নোমান আহমদ ২০/ মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী মোঃ মকসুদ আহমদ ২১/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুল মতিন মজুমদার (কুমিল্লা) ২২/ মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী নুরুল আফসার (ফেনী) ২৩/ মুক্তিযোদ্ধা নানু ক্বারী (কুমিল্লা) ২৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা কাজী আব্দুল মতিন (চাঁদপুর) ২৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মতিউর রহমান (নারায়ণগঞ্জ) ২৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মির্জা মোঃ নূরুল হক (নারায়ণগঞ্জ) ২৭/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আলিফুর রহমান (রংপুর) ২৮/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ক্বারী আব্দুস সালাম সরকার (রংপুর) ২৯/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মোহাম্মদ আলী ৩০/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মাহতাফ উদ্দিন (কুড়িগ্রাম) ৩১/ সেক্টর কমান্ডার মাওলানা সামসুল হুদা (কুড়িগ্রাম) ৩২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আমজাদ হোসেন (কুড়িগ্রাম) ৩৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা কামরুজ্জামান (নরসিংদী) ৩৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা বশির উদ্দিন (টাঙ্গাইল) ৩৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা বজলুর রহমান ৩৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মাহমুদুল হাসান (ময়মনসিংহ) ৩৭/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা কাজী মুতাসিম বিল্লাহ ৩৮/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা সাইফুল মালেক সাহেব (জামালপুর) ৩৯/ মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী খাঁন (চরমোনাই মাদ্রাসা) ৪০/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ইউসুফ ৪১/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ইসহাক রহঃ (চরমোনাই) ৪২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মৌলভী মির্জা আব্দুল হামিদ (বরিশাল) ৪৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুখলিসুর রহমান (চান্দিনা) ৪৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা লোকমান আহমেদ আমিনী ৪৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মোঃ ফিরোজ আহমদ (নোয়াখালী) ৪৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা উসমান গণি (নোয়াখালী) ৪৭/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আব্দুল আউয়াল (চাঁদপুর) ৪৮/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আতাউর রহমান খাঁন (কিশোরগঞ্জ) ৪৯/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আতাহার আলী রহঃ (কিশোরগঞ্জ) ৫০/ মুক্তিযোদ্ধা মৌলভী আব্দুস সোবহান (চট্টগ্রাম) ৫১/ মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবু ইউসুফ (চট্টগ্রাম) ৫২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ফজলুল হক (নূর নগরী) ৫৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা খায়রুল ইসলাম (যশোর) ৫৪/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মহিউদ্দিন (ময়মনসিংহ) ৫৫/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ক্বারী আব্দুল খালেক সাহেব ৫৬/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা সামসুদ্দিন কাশেমী (ঢাকা) ৫৭/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা জহিরুল হক (বি-বাড়ীয়া) ৫৮/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ইসহাক ওবায়দী (নোয়াখালী) ৫৯/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মুফতি নূরুল্লাহ রহঃ (বি-বাড়ীয়া) ৬০/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মিরাজ রহমান (যশোর) ৬১/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা শওকত আলী (শরীয়তপুর) ৬২/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা এমদাদুল হক আড়াই হাজারী (চট্টগ্রাম) ৬৩/ মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ (কিশোরগঞ্জ) ৬৪/ মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী (মোমেন শাহী)।
আমাদের আলেম সমাজ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে দেশকে শত্রুমূক্ত করেছিলেন এবং এটা যে সূর্যালোকের ন্যায় স্পষ্ট তার কিঞ্চিত নমুনা পেশ করা হল মাত্র। বিস্তারিত জানতে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস গুলো অধ্যায়ন করুন।
তথ্য সূত্রঃ-স্মৃতির পাতায় হাফেজ্জী







0 comments:
Post a Comment